শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১১

এলোমেলো ভাবনা, সেই সাথে পড়ন্ত বিকেলে নিজের অতীত জীবন রোমন্থন ও আমার ছোট্ট বেলায় পুজা দেখা-২


এটা লিখার কথা আগেই ছিল কিন্তু লেখা হয়নি হয়তো এইদিনের অপেক্ষায় ছিলাম । সেই ছোটো বেলায় থেকেয় স্কুল এ পড়ার সময় নিজের ধর্মের পাশাপাশি অন্য ধর্ম সম্পর্কে জানার একটা আলাদা ফ্যাসিনেশন ছিল ,যেটা এখন ও হয়তো কাজ করে (হয়তো কারণ ইদানিং সেরকম সময় আর সুযোগ আসলে হয়ে উঠে নি)তবে মনে আছে এখন ও নতুন ক্লাসে উঠার আগেই আব্বু বাসায় বই এনে রাখতো তাই ইসলাম ধর্মের সব জীবন চরিত আগেই পড়া হয়ে যেত ,এমন ও হয়েছে ক্লাস ২ এর পড়া ফেলে আমি ক্লাস থ্রী এর বই নুহ (আঃ) এর জীবনী লুকিয়ে লুকিয়ে বই এর নিচে পড়ছি ।যাই হোক মনে পড়ে ক্লাস ফোর এ থাকতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বা এরকম কোন কিছুর একটা কর্মসূচী ছিল যে বাচ্চাদের বই পড়তে দেয়া হবে এরপর তারা পড়ে ফেরত দিবে জাস্ট ফীড ব্যাক দেবার মত ,আমি আমার ফ্রেন্ড দের সাথে চুক্তি করতাম যে আমি কবিতার বই পেলে তাদের সাথে চেঞ্জ করে নিবো । আমাদের ক্লাসে সবার কাছে মজার মজার বই ই পড়তো হঠাৎ খবর পেলাম ক্লাস থ্রী এর ছোটো ভাই অভিজিৎ একটা বই পেল সেটা হল ছোটো দের মহাভারত।কমিক্স এ আকা অনেক সুন্দর ছিল বই টা আমি বাসায় এনে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তে গিইয়ে ধরা খাই এরপর আবার ফেরত দিয়ে আসতে হয় সেই বই আর পড়া হয়নি পুরোটা তবে এখন ব্লগার দীপান্বিতা এর পোষ্ট প্রায়ই পড়ি ।

এই যে এক প্রসঙ্গ শুরু করলে আবার লাইনচ্যুত হয়ে যাই ,আমার স্বভাবজাত এটা। স্কুলে যাবার পথে খাসিয়া পট্টি পড়তো । প্রায় ই দেখা যেত যে কুকুর এর ভয়ে বা দৌড়ানি খেয়ে স্কুল এ পৌছাতাম ।কুকুরের অনেক ভয় ছিল,একজন স্যার এর বাসা ছিল এই খাসিয়া পট্টিতে তার কথা শুরু করলে এখানে আর শেষ করা যাবে না আসলেই একজন মানুষের জীবনে শিক্ষক এর অবদান অনেক তা স্বীকার করে উপায় নাই । অনেক আদর করতেন আমাকে।
সবচেয়ে মজার হত পুজার সময়কার মেলা গুলো । আর দুর্গা পুজার সময় আসলেই তো আর কথাই নেই যেদিন থেকে মাটি কাই করা শুরু করতো সেদিন থেকে আমার ডিউটি ছিল যে কিভাবে মূর্তি বানায় তা দেখা । নিয়ম করে দুই বেলা, সকালে স্কুল এ যাবার পথে একবার আর আসার পথে একবার কিভাবে মূর্তি বানায় তা দেখা ,এই চোখের সামনেই যেন একদলা কাই থেকে কি সুন্দর মূর্তি হয়ে যেত দেখতে দেখতে টের ই পেতাম না।
মন্দির এ ভিতরে যাওয়া নিষেধ ছিল তাই যেতে পারতাম না আসলেই হয়তো কেউ ই যেতে পারতো হয় তো তাদের পুরোহিত রা ছাড়া ।সবচেয়ে সুন্দর লাগতো যেদিন রঙ করা হত এভাবে চোখের সামনেই মূর্তি তৈরি হত ার আমরা দেখতাম ।সকালে দেখতে গেলে প্রায় ই প্রসাদ খেতে দিত।আমার অনেক প্রিয় ছিল এগুলো এখন কেউ দেয় না এসব । এগুলো দিতে দেরি নেই আর আমার খেতে দেরি নেই সাথে সাথে খেয়ে ফেলতাম।

দশমীর রাতে আব্বু সহ থানার সব আঙ্কেল দের ই দাওয়াত থাকতো আমরা যেতাম আবার আব্বুর সাথে সেখান কি কি যেন খেতে দিত খেয়াল নাই তবে অনেক মজার হত সেদিন এক বন্ধুর ভাই এর ছেলের মুখেভাত এ খাবার এ সময় সেই পুরোনো স্বাদ পেলাম মনে হয় আবার ।

মেলাটা হত সবচেয়ে মজার কত কিছু যে কিনেছি বৈশাখি মেলার কথাও মনে নেই তবে এই পুজোড় মেলার কথা অনেক মনে পড়ে একবার এক বান্ডিল লুডুর বোর্ড কিনে এনেছিলাম আব্বু আম্মু পুরো অবাক এক বান্ডিল দিয়ে কি হবে আমি বললাম কি হবে আর খেলবো একটা নষ্ট হলে আরেকটা বের করবো সেই প্রথম সেট ই এখন ও আছে বাকি গুলো মনে হয় আম্মু সিলেট থেকে কুমিল্লা শিফট করার সময় বাকিদের দিয়ে এসেছিলেন ।দাবাটা কিনা হল না আফসুস এই জন্য মনে হয় এখন ও দাবা খেলাটা পারি না ।দুঃখের আর কোন সীমা নেই ।