বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১১

ফেসবুক বিষয়ক কিছু কড়চা এবং এর সেকাল, একাল ও পরকাল, সাথে একটি ব্লগীয় ফেসবুকীয় শর্টফিল্ম


কয়দিন আগে সিরিয়াস টাইপ লেখার ঝোক হচ্ছিল তখন লিখবো লিখবো বলে আর লেখতে বসতে পারি নি ,কিন্তু লেখার সময় দেখি গড় গড় করে লেখা হয়ে গেলো ,লেখার আগে শুধুই প্রথম লাইন টাই মাথায় এসে ঘুরছিল ,ওয়ার্ড ডকুমেন্ট এ এসে দেখি পুরোটাই গড় গড় করে বসে গেল। এই পোষ্ট টাই সেরকম কিছু একটা হতে পারে ।

তবে যখন লিখবো তখন কোথা থেকে শুরু করবো আর কোথায় গিয়ে শেষ করবো তার তাল আর দিক মেলাতে পারছি না।
তা টপিক হল ফেসবুক নিয়ে , হ্যা আসলে ইদানিং কিছু নতুন ফিচার বলবো না কুফা বলবো যাই হোক এই জিনিস টা উপরে আসলেই বিরক্ত এসে পড়েছে।তাই একটু এটার সুনাম গাইতে আসলাম আর কি ;);)
তাহলে আমরা আসুন জেনে নেই আমাদের ভবিষ্যৎ নেটপাগল ফেসবুক এর জমানা কেমন হবে
***বিকালের আড্ডায় –
আমাদের পিচ্চি বেলা – আসর এর নামাজ পড়ার নাম নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে নামাজ কোনমতে শেষ করে মাঠে খেলতে যেতাম
এখনকার সময় – অমুখ এর ওয়াল বা ইনবক্সে তমুখের ওয়াল পোষ্ট দোস্ত বিকালে গ্রুপ চ্যাট এ থাকিস ।
ভবিষ্যত এ – বিকালে আমার ১৭০ নং আইডির তমুখ মেয়ের/ছেলের(সাইয়া নিক ও হইতে পারে) সাথে ডেটিং ইন চ্যাটবক্স
তা দেখি আসুন কথোপকথন
মেয়ে – তুমি কই থাকো সারাদিন তোমাকে অনলাইনে দেখি না।
ছেলে – ইয়ে মান ঝান সারাদিন অন্নেক বিজি ছিলাম ক্লাস এসাইমেন্ট ব্লা ব্লা ব্লা (মনে মনে আমার কি টাইম এর এতো কম দাম নাকি তোমার লগে সারাদিন চ্যাট করুম )আজকে যা করলাম না জরিনার সাথে চ্যাট এ ………….(বুদ্ধিমান রা বাকিটা ইশারায় বুঝে নিবেন)
***লুলস সমাজ –
আগেকার যুগে – স্কুল বা কলেজের টাইম এ সারাদিন পাংকু মেরে দাঁড়ায় থাকতো ,কত গরম ……..
এখন – পাড়ার কম্পিউটার এর দোকান থেকে ফটোশপে কাজ করা চরম একটা ফটো প্র – পিক লাগিয়ে সারাদিন শুধু কাজ হইলো বসে বসে মেয়েদের এ্যড করা আর মেয়ে ছবি দেখে কমেন্ট করা …………..your photo iz co cweet you like it……can I take my mobile number plz……..লুল ফেলতে ফেলতে ইংলিশ ই ভুলে গিয়েছে নাকি তাদের দৌড় এদ্দুর কে জানে ?? L
ভবিষ্যত – লুলসদের স্টাইল নিয়ে চিন্তা না করাই ভালো তবে ভবিষ্যতে নিজেদের তৈরি কৃত ছাইয়া নিক দিয়ে বৃহত্তম ফেসবুকীয় ছাইয়া মহাযুদ্ধ করার সম্ভবনা আছে
তবে এই ব্যাপার টা নিয়ে একটা নাটক লিখার ইচ্ছা আছে অনেক দিন থেকে –
আগেকার দিনের যখন মেয়ে তার পছন্দের ছেলেকে বাসায় নিয়ে এসেছে বাসায় মার সাথে পরিচয় করাতে –
মেয়ে – মা এর নাম সুমন(কাল্পনিক নাম)
ছেলে- খালাম্মা স্লামালিকুম
মা- (ছেলের আদব কায়দা দেখে তো গদগদ) তা বাবা তুমি কি কর চাকরি বাকরি কিছু ??
ছেলে – না খালাম্মা আমি বেকার
মা – তাহলে আমার মেয়েকে খাওয়াবে কি ?? (মনে বড়ই আফসোস কারন মার ছেলে পছন্দ হয়েছে কিন্তু মেয়ের বাবা )
ছেলে – খালাম্মা আমরা গরিব হতে পারি কিন্তু আপনি জেনে রাখবেন গরিবের ও ভালোবাসা বলে কিছু আছে (সাথে বাংলা সিনেমায় কড়া ভাবে চলনসই কিছু ডায়ালগ)
এখন কার সময় –
মেয়ের মা – তোমার বাবা কি করেন?
ছেলে – বাবা ব্যবসা করেন (চাপার উপরে দুনিয়ে চলে এখানে মারলেও গুনাহ নাই )
মা – তা তোমার কি অবস্থা নিশ্চয় তুমিও বাবার ব্যবসায় হাল ধরেছ ,তোমার ব্যাংক একাউন্ট আছে কয়টা ?
ছেলে- আন্টি এতো ফেসবুক একাউন্ট এর খোজ তো নিতে পারি না ,আছে এই ধরুন ২০ টার উপরে তো হবেই …….
মা – বুঝলেন ফেসবুক নিশ্চয়ই কোন ব্যাঙ্কের নাম ,ও আচ্ছা আচ্ছা
ভবিষ্যত –
বাবা – মা নীলস দেখ তোর জন্য কত্ত ভালো একটা ছেলে এনেছি যা তোরা নিজেদের মাঝে কথা বার্তা বল ।
মেয়ে –কিছুক্ষন পর কথা বার্তা বলে এসে (মন খারাপ এর চেহারা করে) এই ছেলেকে আমি বিয়ে করতে পারবো না বাবা
বাবা – কেন মা ??!! তোর জন্য এতো খুজে ছেলে আনলাম
মেয়ে – কারন বাবা এই ছেলের কোন ফেসবুক ফ্যান পেইজ ই নাই .........
এ্যন্ড ইউ নো ড্যাডি আমার বর এর ফেসবুক ফ্যান ৪০০০০ এর নিচে হতে কোনভাবেই পারবে না
বাবা- তখন ই ছেলের বাবা ছেলেকে গিয়ে তিরষ্কার
এই ছেলে তোমার বায়োডাটায় ছিল তুমি খুব বিখ্যাত একটা পেইজ এর এ্যাডমিন আমার মেয়ে তাহলে কি বলে ??(ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজ নিয়ে আমি নিজেই কনফিউজড আসলে কি বানানো উচিত)
ছেলে – ওহ আঙ্কেল ,আমি আপনার মেয়েকে বলতে চেয়েছি যে আমি
“ছেলের ৯৯% ই ওকে কিন্তু কোন ফ্যান পেইজ নাই ”এই পেইজ এর এ্যাডমিন আর আপনার মেয়ে কিনা ভুল শুনলো
মেয়ে – পর্দার আড়ালে থেকে শুনে লজ্জার হাসি দিয়ে ছেলের সামনে এসে বলল আই লাভ ইউর পেইজ রেজস…………আমাকে তোমার পেইজ এর এ্যাডমিন করবে না ?? ……………
সিনেমার সমাপ্তি …………….